লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

তন্ময় ভট্টাচার্য

পুত্রশোকাতুরা

পুত্রশোকাতুরা নারী, তাঁর ব্যথা কতটুকু জানি!
শুধু কি মৃত্যুর শোক? সন্তানের অযোগ্যতা নয়?
গৃহসূত্রে বেঁচে থাক বাংলার পিতৃপরিচয়
দিনান্তে, ভাতের পাতে, কীভাবে সংসার চলে, তাতে—

আত্মশোকাকুল যুবা কোনোদিন বুঝিবে নিশ্চয়!

নসিব

তোমাকে, স্মৃতির দেশে…
স্মৃতিরও রায়ট, খানদানি

দিবারাত্র ঝিকঝিক, কু এবং সীমানা-স্টেশন

কোথায় যে চলে যাও
ফেরত আনতে গিয়ে দেখি পর্দা, নসিব হয়েছ

একটি বেয়াড়া স্মৃতি
খুদগর্জ
থমথমে
একা

শাদা পৃষ্ঠা

‘এতদিন হয়ে গেল, ওসব কি মনে রাখলে চলে!’
এই বলে, বই ছেড়ে চলে গেল প্রেমের কবিতা

শিরোনাম একা-একা কিছুদিন চেষ্টা করেছিল
তারপর, অন্য কোনো বই দেখে, প্রতিপত্তি দেখে
যেই-না এগোতে যাবে— টান পড়ে সেলাইয়ে, পাতায়

কবিতা, শরীরইচ্ছা, বিজ্ঞাপনে ভুল থেকে যায়

নিঃসঙ্গতা

জীবন, আশ্চর্য কিছু হতে পারত। সেই সূত্রে
সাজিয়ে নিতাম দীক্ষা, ঝোড়ো রাত, অনিদ্রাকুসুম

জীবন, সচরাচর হয়ে রইল। ঘর থেকে
আরেকটি ঘর— ফের আরেকটি— সাড়াশব্দহীন—

পায়ে পা লাগিয়ে ভাবছি
আমাদের ঝগড়া হল খুব

ভূগোল অথবা মানববিদ্যা

এইসব ভয়ংকর কথা, তারও ভিতরকার কথা থেকে একটা ছোট্ট খাঁড়ি বেরিয়ে এসেছে। এঁকেবেঁকে চলে যাচ্ছে ঘন জনবসতির মধ্যে দিয়ে। অথবা খাঁড়িই পুরোনো; স্বভাব পালটাবে না জেনে দু-পাশ থেকে চেপে ধরেছে মানুষ। দু-হাজারের বন্যায় একবার চমকে দিয়েছিল। আটাত্তরেও। তার আগের কথা কারোরই মনে নেই বিশেষ। পলি পড়তে পড়তে ক্রমশ বুজে এসেছে গলা। খাঁড়িটি, নদীর কাছে ফিরে রোজ চুপ করে বসে। ভয়ংকর কথাগুলো যাহোক মসৃণ করে বলে। নদী বোঝে, শেষ হল। তারও গলা ধরে আসতে থাকে।

তন্ময় ভট্টাচার্য

জন্ম বেলঘরিয়ায়। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও অনলাইন ম্যাগাজিনে লেখা প্রকাশিত হয়েছে।

পছন্দের বই