বাংলার বিভিন্ন কুটির শিল্প নিয়ে গবেষণাধর্মী একটি সংখ্যা।
Shipping class: Initial
উনিশ শতকে বাঙালি মেয়েদের এক অকথিত ইতিহাস অচেনা অন্তঃপুর। সংসারের নোনা ধরা দেওয়ালের খসে পড়া পলেস্তারার মতো জীবনের সবটুকু রসদ দিয়ে তারা বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিল পরিবার পরিজনকে। আর পিতৃতান্ত্রিক সমাজ নির্ধারিত ঝুলকালি মাখা হেঁশেল আর স্যাঁৎসেঁতে অন্ধকূপের মতো আঁতুড়ে জীবন অতিবাহিত করে ভুলতে বসেছিল জীবনদাত্রীর ভূমিকা যথার্থভাবে পালন করতে হলে চাই আগে নিজেদের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া। মেয়েদের স্বাস্থ্য মানেই শুধু প্রজনন স্বাস্থ্য নয়। সেদিনের অন্তঃপুরচারিণীদের নিয়ে এক ভিন্নধর্মী গবেষণার ফসল এই বই ।
এই বইয়ের সমস্ত লেখাই আসলে এক-একটি উচ্চকিত, অস্বস্তিকর প্রশ্ন। যে-সময়বৃত্তে দাঁড়িয়ে আছি আমরা সকলে সেখানে এই প্রশ্নগুলি আমাদের ভাবতে বাধ্য করে। শাসকের খামখেয়ালি নিষ্ঠুরতা, নির্লজ্জ দায়িত্বহীনতাকে বেনকাব করে। মারি-মড়কের ইতিহাস অনুসন্ধান, শাহিনবাগের মেয়েদের লড়াই, কৃষক আন্দোলনের পাঠ বা প্রান্তজন চর্চায় ঋত্বিক ঘটকের অধিকার আপাতভাবে পৃথক বিষয় কিন্তু সমস্ত বিষয়ই বিন্যাসই পরিশেষে অপরজনের হয়ে সওয়াল করে, তাদের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে চায়। এই অপরজন সব সময়ে গাণিতিক বিচারে ‘সংখ্যালঘু’ নন, বলা ভালো বিজয়ী সংখ্যাগুরুতন্ত্রে ‘ইতরজন’। এই মানুষগুলো নিজভূমে ‘পরিযায়ী’, কখনো নির্মাণকর্মী, কখনো ‘ফুড ডেলিভারি-বয়’ তকমা পাওয়া কেউ। পরিচিতির গ্লানি, খরতাপে পথ হাঁটার অনিঃশেষ যন্ত্রণা, ক্ষোভ ধরা আছে দুই মলাটের ভিতর।
মনোজ দে-র কবিতার বইটা ভারি আশ্চর্যের। সব কবিতাই আত্মজৈবনিক। কোথাও প্রকট, কোথাও-বা প্রচ্ছন্ন। এই বইটিতে ঠাকুমা, মেজো, দাদু, ন-দিদা, বড়দি, মেজোমামি, সৌরভ প্রভৃতি সরাসরি কবিতার নাম হিসেবে এসেছে। অর্থাৎ, একটি পরিবারের আলো-অন্ধকার বইয়ের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে রয়েছে। একটি একান্নবর্তী পরিবারের আত্মকথা যেন। সেখানে আনন্দ আছে। বিরহ আছে। সেই বিরহ বনেদি ছাড়া কীই-বা হতে পারে?
‘উত্তরের পালাগান’ এই বইটির মূল বিষয় হল প্রায় হারিয়ে যাওয়া বাংলার কিছু প্রাচীন পালাগান। বিষহরি বা তিস্তা বুড়ির পালাগানের নাম হয়তো আমরা শুনেছি কিন্তু অনেকেই আমরা পালাটিয়া, গোরক্ষনাথ, চোর চুন্নির পালার কথা স্বল্পশ্রুত। এই বইতে সাধ্যমতো এইসব স্বল্পশ্রুত পালাগানগুলিকে এক সুতোয় গাঁথার চেষ্টা করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে এসবের উৎপত্তি, বিবরণ এবং বিবর্তনের কথা।