লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

গৌতম সরকার

হরেশ কাকার স্যান্ডো আর শরীরে লবণ দিয়ে ভারতবর্ষ আঁকা।
সে-ম্যাপে আছে পাকিস্তান, চীন, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ।
সে যখন হাল দেয় তখন মাটির গন্ধ গায়ে মাখতে ঘুটকুরি আসে, দুধ সাদা বক, টেকেনাই…। এরা
কোন এক প্রাচীন কাল থেকে স্নান করে না। শরীরে তাদের শামুক খোলের মতো মেঠো গন্ধের আস্তরণ।
প্রতীক্ষা নিয়ে বসে থাকে… এক আড়াই আঙুলের লোভে।
আর সেই ডানপিটে আড়াই অন্ধকারকে দড়ি বানিয়ে বানিয়ে ভাগ করে— নুন, ভাত, ফ্যানা।

তোমাকে পেতে চেয়ে শরীর পেতেছি।
আর পেতেছি দুধ সাদা বুক…
তোমাকে চেয়ে উল্লেখযোগ্য উলঙ্গ হয়েছি। অথবা দৃষ্টান্ত হব বলে।
উপরে দিয়েছি ভেজা খড়। ছেঁড়া ধকর। ছোটো ছোটো টেকা দেখব বলে ভোরের আঁচল সরিয়েছি।
ছেনিতে ছুয়েছি জল। মুস দিয়েছি মাখিয়ে…
এত কাণ্ডের পর জুহুরি এসে যখন বল— ও তো খাস্তান!!
তবে পরাগও মিছামিছি মিলন করে। শরীর চেপে থাকে রস।

পাগলা গোরুটাকে অনেক কষ্টে বাগাতে পেরেছি।
সে এখন ডান বাম বোঝে। উঠস বইস বোঝে।
হাই তোলে না আর আগের মতো। লাঙল তুলে দিই ঘারে। তাল তাল সন্তান পাবার আশায় বীজ পুঁতে দিই জমির শরীরটাতে…
জানো নন্দ— এতে কতবার শরীর ভাঙে।
আমার, জমির, গোরুর।
আর তুমি শুধু উল্লেখযোগ্য ভাম ধরো। বাজে খেলো। নীতি করো। আমি কতটুকু তোমার নিয়েছি? আর তুমি কতটা পেয়েছ নন্দ?
চলো খেরোর খাতা খোলো…

মা বলে— বাসন একখানে থাকলে ওমন শব্দ হবেই।
রোজই রেগে ওঠে বড়ো মুখ ওয়ালা ডেকচি। ঝনাঝন শব্দ হয়। কেটলির কারি আর আগুন মোতা গরম সইতে পারি না বলে একা চলে যাই দূরে।
কেকারুদের বাগানে বড়ো গাছে গিয়ে লুকোচুরি হই। মা হয় হয়রান। বাবা হয় আগুন
মা বলল— একদিন দেখিস
সেই যে টুকুনটা ছিল। আমি তাকে বলতাম চিকনঠোঁটি। সে গতকাল হাতবদল হয়েছে। তার কান্না দেখে আমি ভান করেছি।

মা আর কিছু বলে না।
এখন শুধু ভাত হতে ইচ্ছে করে…

পিতা হওয়ার চিন্তা আঁকি। কিংবা আদরের কোল।
দুই থেকে বারো ঘরের নামতা মুখস্থ হয়নি কোনো কালেই। তাই, যোগ আর ভাগের সময় অনেক দাঁড়ি কেটেছি খাতায়।
বলে আপাত এই শ্বাশত বুক ছিঁড়ি। হাতের রেখায় মৃত্যু যোগ খুঁজে একের পর এক গুণ কষতে থাকি। ইনফিনিটি চিহ্ন ছেড়ে হাল কষি ততক্ষণ, যতক্ষণ না বুদ্ধের চরণ অবধি পৌঁছাতে পারি…

পুতুলনাচ এখন নতুন করে ভাবি…
কেমন এক অদৃশ্য সুতোয় ঝুলে আছে মেঘ।
যেমন থাকে জন্ম ও মৃত্যুর সম্পর্কের মাঝামাঝি। উলম্ব… কোনো মোহযুক্ত টান নেই অযথা ঝড়ে যাওয়ার। নেহাতই নিয়ম মেনে চলা ক্লাস সেভেনের ছাত্র সে…
ঘণ্টা-রুটিন-পোশাক…

সে যখন লাবণ্য খায়। বিয়ে হয়…।
খিদে বাড়ে আরও।
মনে হয় আর নয়। নয় আর…
তারপর আবার চরম হতে চায়। শক্ত হয় আটি… তুলতুলে হয় দানব। সে তো এক ভয়াবহ চক্রব্যূহে লড়াই!! লড়তে থাকা ক্লান্ত ভক্ষক চেটেপুটে খেতে থাকে রস।
এরপর না-থাকার এক দশর্ন পাঠ করে। আর না। না আর… সাধু হয়।
না-বাচকের পাঠক হয়।

Facebook Comments

পছন্দের বই