লেখক নয় , লেখাই মূলধন

সাদাত হাসান মান্টোর গল্প

খোলো

মূল উর্দু থেকে অনুবাদ: কাজী মোহাঃ মাকীন

অমৃতসর স্টেশন থেকে স্পেশাল ট্রেনটা দুপুর দু-টোয় ছেড়েছিল। আট ঘণ্টার দুঃসহ যাত্রার শেষে সেটি মোগলপুরা স্টেশনে পৌঁছোয়। দাঙ্গাকারীদের আক্রমণে পথেই বেশ কিছু মানুষের প্রাণ যায়, অনেকে আহত-ক্ষতবিক্ষত হয় আর বহু মানুষ প্রাণভয়ে এদিক-ওদিক ছিটকে যায়।

পরের দিন সকাল দশটা। ক্যাম্পের শীতল মেঝেতে জ্ঞান ফিরতে চোখ মেলে তাকাল সিরাজুদ্দীন। আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা আহত-মৃত-আতঙ্কিত নারী-পুরুষ-শিশুর ভয়াবহ দৃশ্য ও আর্তনাদ তার বোধবুদ্ধিকে আরও রহিত করে দিল। জড়বৎ সিরাজুদ্দীন দীর্ঘক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে মলিন আকাশের দিকে। ক্যাম্পের আর্তনাদ, শোরগোল বুড়ো সিরাজুদ্দীনের কানেই ঢোকে না যেন। আপাত বধির নিস্পন্দ মানুষটাকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো গভীর চিন্তায় মগ্ন; কিন্তু আসলে তা নয়। তার সমস্ত বিচারবুদ্ধি, অনুভূতি— সব যেন থমকে গেছে। তার সমস্ত অস্তিত্ব যেন কোনো এক শূন্যতায় হারিয়ে গেছে।

চিত্র: সোমনাথ হোড়

মলিন আকাশের বুকে শূন্যদৃষ্টি ফেরাতে ফেরাতে তার চোখে রোদ্দুরের ঝাপটা লাগল। রোদের তীব্র আলো তার অস্তিত্বের শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে পড়তেই সে যেন বাস্তবের মাটিতে আছড়ে পড়ল। তার স্মৃতিতে কয়েকটা ছবি ছুটে গেল— লুটপাট… আগুন… পালানো… স্টেশন… গুলি… রাত আর ‘সাকীনা’! সিরাজুদ্দীন এক ঝটকায় উঠে দাঁড়াল আর চারপাশের অগুনতি মানুষের ভিড়ে পাগলের মতো তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকল।

পুরো তিনটে ঘণ্টা ক্যাম্পের আকাশে-বাতাসে তার ‘সাকীনা! সাকীনা’ চিৎকার ব্যর্থ হয়ে ফিরতে লাগল, তার সদ্য যৌবনে পা-দেওয়া একমাত্র কন্যার কোনো সন্ধান পেল না। চারিদিকে একটা দিশেহারা বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে— কেউ সন্তান খুঁজছে তো কেউ তার মা-কে খুঁজছে; কেউ স্ত্রীকে খুঁজছে তো কেউ তার কন্যাকে। পরাজিত, বিধ্বস্ত সিরাজুদ্দীন একপাশে বসে স্মৃতি খুঁড়ে দেখতে লাগল কখন আর কোথায় সাকীনা তার থেকে আলাদা হয়ে গেছে। স্মৃতিপথে পিছু হাঁটতে গিয়ে সে ধাক্কা খেলো সাকীনার মায়ের লাশে। স্মৃতিপটে ভেসে উঠল ফালা হয়ে যাওয়া পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসা একটা লাশ! নাহ্‌, আর সে ভাবতে পারছে না!

সাকীনার মা মরে গেছে, তার সামনেই— এটুকু সে বুঝতে পারল। কিন্তু সাকীনা কোথায় ছিল যে তার মা মৃত্যুর মুখে পড়ে থেকেও তাকে বলেছিল, “আমাকে ছাড়ো, তুমি সাকীনাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি এখান থেকে পালিয়ে যাও।”

তাই তো! সাকীনা তো তার সাথেই ছিল! দু-জনে খালিপায়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে পালাচ্ছিল… তারপর সাকীনার ওড়নাটা পড়ে গেল… সেটা ওঠানোর জন্য সে থামতে যাবে কি সাকীনা চিৎকার করে বলে উঠেছিল, “আব্বাজী, ছেড়ে দাও!”… সে কিন্তু ওড়নাটা তুলেই নিয়েছিল— এইসব ভাবতে ভাবতে তার চোখ চলে যায় কোটের ফুলে থাকা পকেটের দিকে। পকেটে হাত ঢুকিয়ে একটা কাপড় বের করল— সাকীনার সেই ওড়নাটা। কিন্তু সাকীনা কোথায়…!?

সিরাজুদ্দীন তার ঝিমিয়ে পড়া স্মৃতিতে আরেকবার ডুব দিল। নাহ, কিছুতেই মনে করতে পারছে না! সে কি সাকীনাকে সঙ্গে নিয়ে স্টেশন পর্যন্ত এসেছিল? সাকীনা কি তার সাথেই গাড়িতে চড়েছিল? তারপর কি রাস্তায় ট্রেন থামিয়ে দাঙ্গাকারীরা ট্রেনে ঢুকে পড়ে আর তার অচেতন অবস্থায় তারা সাকীনাকে তুলে নিয়ে যায়?

সিরাজুদ্দীনের মনে একের পর এক প্রশ্ন জাগতে থাকে, অথচ কোনো উত্তর খুঁজে পায় না। উফ, কেউ যদি তার একটু সহমর্মী হত! কিন্তু তার আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর প্রত্যেকেরই যে এই সময় সহানুভূতির প্রয়োজন! সিরাজুদ্দীনের বুক ঠেলে কান্না এল, চোখটাও তার সাথ দিল না, অশ্রু হারিয়ে গেছে যেন!

দিন ছয়েক পর বোধবুদ্ধি একটু ধাতস্থ হলে সিরাজুদ্দীন একটা সশস্ত্র উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে দেখা করল। তাদের কাছে একটা ট্রাকও ছিল। সিরাজুদ্দীন তাদেরকে পেয়ে প্রাণ উজাড় করে অনেক দোয়া করল আর সাকীনার চেহারার বর্ণনা দিল বাৎসল্যের আকুল আবেদন নিয়ে, “মেয়েটা আমার ফর্সা, ফুটফুটে ছিল গো বাবু… ও না আমার মতো না, ওর মায়ের মতো হয়েছে… বছর সতেরো বয়েস… টানা টানা চোখ… কালো ঢাল চুল… ডানগালে একটা বড়ো তিলও আছে… আমার একটাই মেয়ে বাবু… তাকে খুঁজে এনে দাও… আল্লা তোমাদের ভাল করবে।”

স্বেচ্ছাসেবী যুবকগুলো বুড়ো সিরাজুদ্দীনকে দৃঢ় আশ্বাস দিল যে, তার মেয়ে যদি বেঁচে থাকে তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই তারা মেয়েকে তার কোলে ফিরিয়ে দেবে।

আট যুবক মিলে অনেক চেষ্টা করল। প্রাণ হাতে নিয়ে অমৃতসর পৌঁছে তারা অনেক নারীপুরুষশিশুকে খুঁজে বার করে সুরক্ষিত স্থানে পৌঁছে দেয়। এভাবে আরও দশদিন কেটে গেল, কিন্তু সাকীনাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না।

একদিন তারা এরকমই উদ্ধারকার্যে অমৃতসর অভিমুখে বের হল। পথিমধ্যে রাস্তার ধারে একটি মেয়ে তাদের নজরে এল। ট্রাকের আওয়াজে ঘাবড়ে গিয়ে সে দৌড়তে শুরু করল। স্বেচ্ছাসেবকগুলো গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়ল। সব্বাই মিলে তাকে ধরার জন্য পিছনে ছুটল। একটা ক্ষেতের মাঝে গিয়ে তাকে সবাই ধরে ফেলে। সিরাজুদ্দীনের বর্ণনামতো ফুটফুটে, ডানগালে তিল দেখে ওদের একজন তাকে বলল, “ভয় পেয়ো না… তোমার নাম কি সাকীনা?”

মেয়েটির মুখ ভয়ে আরও বিবর্ণ হয়ে গেল। সে কোনো উত্তর দিল না। কিন্তু সকলে মিলে যখন তাকে আশ্বাস দিল, ভরসা দিল তখন তার ভয়টা দূর হল। ওদেরকে জানালো যে সে-ই সিরাজুদ্দীনের মেয়ে সাকীনা।

আট স্বেচ্ছাসেবী যুবক যেভাবে পারে সাকীনার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে তাকে খাওয়াল, দুধ দিল গ্লাস ভরে। তারপর ট্রাকে বসাল। বুকে ওড়না নেই বলে মেয়েটি আড়ষ্ট হয়ে বসে ইতঃস্তত বোধ করছিল আর হাত দিয়ে বারবার বুকটা আড়াল করার একটা অসহায় চেষ্টা করছিল। তা লক্ষ করে এক যুবক তার কোটটা খুলে মেয়েটার গায়ে চাপিয়ে দিল।

কয়েকদিন কেটে গেল। এদিকে সিরাজুদ্দীন মেয়ের কোনো খবর পাচ্ছে না। সারাদিন ধরে এ-ক্যাম্প সে-ক্যাম্প, এ-দপ্তর সে-দপ্তরে চক্কর কাটতে থাকল ক্ষীণ আশা নিয়ে। কিন্তু সাকীনার কোনো খবর নেই। গভীর রাত অবধি সে ওই স্বেচ্ছাসেবী ছেলেগুলোর সাফল্যের দোয়া চেয়ে যায়, যারা তাকে দৃঢ় আশ্বাস দিয়েছিল ‘সাকীনা যদি বেঁচে থাকে কয়েকদিনের মধ্যেই তারা তাকে খুঁজে বের করবে।’ এভাবেই একদিন সিরাজুদ্দীন ক্যাম্পে সেই যুবকগুলোকে দেখতে পেল ট্রাকে বসে আছে। ট্রাক ছাড়ার মুখে, এই সময় সিরাজুদ্দীন উর্দ্ধশ্বাসে দৌড়ে গিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করল, “বাবা, আমার সাকীনার কোনো খবর পেলে?”

সব্বাই প্রায় এক কণ্ঠে বলে উঠল, “পাওয়া যাবে, শিগগিরই পাওয়া যাবে!!”

সিরাজুদ্দীন আরও একবার যুবকগুলোর সাফল্যের জন্য দু-হাত তুলে দোয়া চাইল। তার মনটাও যেন একটু হালকা হল।

ওইদিন সন্ধ্যায়, ক্যাম্পে, সিরাজুদ্দীন যেখানটায় বসে ছিল তার কাছেই কিছু একটা শোরগোল চোখে পড়ল। চারটে লোক কিছু একটা বহন করে নিয়ে আসছে। খোঁজখবর নিয়ে সে জানতে পারল, রেললাইনের পাশে একটা মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। ওই লোকগুলো তাকে তুলে নিয়ে এসেছে। সিরাজুদ্দীন ওদের পিছু নিল। লোকগুলো মেয়েটিকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে চলে গেল। সিরাজুদ্দীন বেশ কিছুক্ষণ হাসপাতালের বাইরে একটা কাঠের খুঁটি ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রইল। তারপর ধীরপায়ে ভিতরে ঢুকে দেখল সেখানে কেউ নেই, ফাঁকা আর একটা স্ট্রেচারের উপর একটা দেহ পড়ে আছে। সিরাজুদ্দীন পা টিপে টিপে সেদিকে এগিয়ে গেল। ঘরের আলো হঠাৎ জ্বলে উঠতেই সিরাজুদ্দীনের চোখে পড়ল, লাশের বিবর্ণ মুখে পরিচয়ের চিহ্ন হয়ে জ্বলজ্বল করছে একটা তিল!

সিরাজুদ্দীন চিৎকার করে উঠল, “সাকীনা!”

যে-ডাক্তারটা ঘরে আলো জ্বালাল সে সিরাজুদ্দীনকে জিজ্ঞাসা করল, “কী হয়েছে?”

ভেঙে পড়া সিরাজুদ্দীন অস্ফুটস্বরে শুধু বলতে পারল, “আমি… আমি… ওর বাপ!”

ডাক্তার স্ট্রেচারে পড়ে থাকা শরীরটার দিকে তাকাল। তার নার্ভ পরীক্ষা করল। তারপর সিরাজুদ্দীনকে বলল, “জানালাটা খোলো…।”

সাকীনার মৃত শরীরটা যেন নড়ে উঠল! তার নিষ্প্রাণ হাত দুটো পাজামার দড়ি খুলে পাজামাটা নামিয়ে দিল!

বুড়ো সিরাজুদ্দীন অভাবিত আনন্দে চিৎকার করে উঠল, “বেঁচে আছে… আমার বেটি বেঁচে আছে…!”

ডাক্তারের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঘামের শীতল স্রোত বয়ে গেল…!!

লেখক পরিচিতি:

[সাদাত হাসান মান্টো (১৯১২-১৯৫৫) উর্দু সাহিত্য জগতের একটি প্রবাদপ্রতিম নাম। একাধারে সাংবাদিক, সাহিত্য-সমালোচক, চিত্রনাট্য ও নাট্যকার মন্টোর সমাজের প্রতি তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ জন্ম দিয়ে অনেকগুলি ছোটোগল্পের, যার প্রত্যেকটিই শিহরণ জাগানো। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও দেশভাগের প্রেক্ষাপটে সমকালীন দেশ, কাল ও সমাজের পরিস্থিতি তাঁর কলমে অকপট নিপুণতায় ফুটে উঠেছে। স্বাধীনতাপূর্ব পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় জন্ম। স্বাধীনতা আন্দোলন, ব্রিটিশ অত্যাচারের সাক্ষী থেকে নিয়ে দেশভাগের নিষ্ঠুর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হন যার প্রতিচ্ছবি নিদারুন মর্মস্পর্শী শব্দে আছড়ে পড়ে পাঠকের বিবেকে। যুদ্ধ ও দাঙ্গার প্রত্যক্ষ করা নিষ্ঠুরতার যে-দুঃসাহসী বর্ণনা নাড়িয়ে দিয়ে যায় মনুষ্যসত্তাকে। তাঁর লেখা জন্ম দিয়েছে বিতর্কের। অভিযুক্ত হয়েছে অশালীনতার দায়ে। কিন্তু অস্বীকার করা যায়নি তার কঠোর সত্যকে। তাদের প্রতি মান্টোর উক্তি, ‘তোমরা যদি আমার গল্পকে নোংরা মনে করো, তার মানে তোমরা যে-সমাজে আছ সেটাই নোংরা। আমি আমার গল্পে কেবল সত্যটাই বলে দিই।’ ভারতকে আপন করতে চেয়ে পারেননি। বাধ্য হন দেশ ত্যাগ করতে। শেষ জীবন লাহোরে অতিবাহিত করেন।

দেশভাগের চরম মূহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকা তাঁর রচনাসমূহের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত একটি কাহিনি হল ‘খোল দো’। দেশভাগের সময় দুই ভূখণ্ডের সাধারণ মানুষের উপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত অত্যাচারের নির্মমতার কথা বলে এই গল্পটি। তিনি তাঁর গল্পের অত্যাচারী, দাঙ্গাকারী নরপিশাচদের হিন্দু অথবা মুসলিম, ভারতীয় বা পাকিস্তানী বলে কোনো জাত-ধর্মের রং দেননি, বরং একজন মানুষ হয়েও তার পাশবিকতা ও হিংস্রতাকে তুলে ধরেছেন। তাই হয়তো, মান্টোর গল্প যে বিতর্কই তুলুক, তাঁর দিকে সাম্প্রদায়িকতার আঙুল কেউ তোলার সাহস দেখায়নি। এই গল্পে দেশভাগের সময় ট্রেনে করে ভারতের পাঞ্জাব থেকে পাকিস্তানের লাহোর অভিমুখে প্রাণভয়ে পলায়মান এক ব্যক্তির তাঁর কন্যার থেকে বিচ্ছেদ ও তাঁকে ফিরে পাওয়ার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। তবে বাস্তবতার কশাঘাত নিহিত রয়েছে হারানো থেকে ফিরে পাওয়ার মাঝের সময়ে, যেখানে অসহায় পরিস্থিতিতেও নারীলোলুপ পুরুষের দ্বারা ক্রমাগত ধর্ষণের শিকার হয়ে মেয়েটি মানসিক আঘাতে নির্বাক ও জীবন্মৃত হয়ে যায়। আপাত নিথর দেহটির কর্ণকুহরে ঘটনাচক্রের ‘খোল দো’ শব্দের অভিঘাত দেহটিতে যেন যান্ত্রিক স্পন্দন সঞ্চার করে। সম্মোহিতের ন্যায় তার হাত খুলে দেয় পাজামার দড়ি। এই প্যাভলভিয়ান প্রতিক্রিয়া এক মূহূর্তে পাঠকের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় ক্রমাগত ধর্ষণের পৈশাচিক আদেশে যন্ত্রের ন্যায় অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া এক নারীকে যার কাছে ধর্ষণটাই এক নতুন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নিষ্প্রাণ প্রতিক্রিয়া আয়না দেখিয়েছে সমাজে লুকিয়ে থাকা অজস্র ধর্ষককে, অত্যাচারীকে, নগ্ন করে দিয়েছে মানবতাহীন দেশভাগের কঠোর সিদ্ধান্তকে। এই কাহিনিতে মান্টোর অনন্য বৈশিষ্ট্য হল, তিনি একবারের জন্যও বলেননি মেয়েটির সঙ্গে কী ঘটেছে। গল্পের শেষ পর্বে কেবল দুটি বাক্যই যথেষ্ট তার সুপ্ত কথাকে বাঙ্ময় করতে।

মূল ভাষার অনুভবকে যথাসাধ্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। ‘খোল দো’ শব্দের অর্থ ‘খুলে দাও’। ইংরাজি অনুবাদে ‘দ্য রিটার্ন’ ব্যবহার করা হলেও সরাসরি উর্দু থেকে এই অনুবাদে আমি ‘খোলো…’ নামটি যথার্থ হবে বলে মনে করেছি, কারণ উর্দুর শীর্ষকে যে-হিমশীতল আদেশের সুর লুকিয়ে আছে, তা কিছুটা হলেও ফুটে উঠবে এর মধ্যে।]

Facebook Comments

পছন্দের বই