কবিতা
নিয়াজুল হক
বিগ-ব্যাং
আমি
বর্তমানে
আগুনের ভেতর ঘর বানিয়ে
বিশ্রাম করছি
শাসন দেখছি
তোষণ দেখছি
এবং
নাশন দেখছি
আপাতত
সব হৃৎপিণ্ডের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখছি
বুঝতে পারছি
আমরা আর একটা বিগ-ব্যাংয়ের
প্রাক্কালে এসে হাজির হয়েছি
আবার
নতুন করে সূর্য সৃষ্টি হবে
আবার
চাঁদ হবে
আবার
মহাকাশ জন্ম নেবে
কবন্ধ কথা
একদা
একতাল লোহা
গোল চ্যাপ্টা এবং পুরু হয়ে
তৈরি হয়েছে
কোদাল গাঁইতি এবং শাবল
এরাই একদিন
তাপে চাপে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে
ব্রহ্মাস্ত্র হয়ে দেখা দেবে
এরাই
তোমার চেয়ার-টেবিলের পায়া ভেঙে
তোমাকে উলটে দেবে
তোমার ধরমুণ্ডু আলাদা করবে
এরাই তোমাকে
মাথাকাটা কণিষ্কের মতো কবন্ধ বানাবে
তার আগে
তোমার লুকোনোর
গোপন আস্তানা খুঁজে নাও
হে দেবদেবী
ভূমিকম্প
নেহাত
উলটো দিক থেকে
পা পিছলে পড়ে গেছি
নেহাত
দু’পায়ে উঠে দাঁড়াতে পারিনি
নেহাত
আমি পলকা হয়ে জন্মেছি
তাই কিছু বলিনি
এসবই কালক্রমে
মেঘের আড়ালে
পাহাড়-পর্বতের গুহায়
অথবা
সমুদ্রের তলদেশে
দীক্ষা নিয়ে
সামনে এসে দৈত্যের মতো দাঁড়াবে
এদের হাতেই থাকবে
ভূমিকম্প রচনার যাবতীয় কৃৎকৌশল
তুমি থরহরিকম্প হয়ে
থপাস করে মাটিতে সপাটে পড়ে যাবে
তোমার চারপাশে
তোমাকে তুলে ধরার মতো
একজনও কেউ থাকবে না
মধুসূদন
মাত্র
একটাই শর্ত
হয় মৃত্যুকে বেছে নাও
নয়তো
জীবন আমার হাতে সঁপে দাও
আমি তোমাকে
ইচ্ছেমতো
মাংসের মতো টুকরো করব
সবজির মতো কুটবো
অথবা
মাছের মতো পিস করব
তারপর
একদিন
পেস্ট করে কোপতা-কাবাব বানাব
ঘরে ঢুকব-বেরবো
আর একটা করে মুখে ফেলে দেব
তোমাকেই
কখনো ভিখিরির পাত্রে
খুচরো পয়সার মতো ছুঁড়ে দেব
কখনো
নোটের মতো ওড়াবো
আমার সাম্রাজ্যের
হর্ম্যরাজি দেখে চিনতেই পারবে না আমাকে
কখন আমি
মদনা থেকে মধুসূদন হয়ে গেছি
পুনর্জন্ম
জাতকের গল্পের মতো না হলেও
সমস্ত ব্যবহার্য দ্রব্যেরই পুনর্জন্ম আছে
প্রথমে
পা থেকে মাথা পর্যন্ত ধরুন
পায়ের জুতোমোজা চপ্পল প্যান্টশার্ট বেল্ট বুকপকেটের কলম হাতের আংটি স্টোন গলার চেন যা যা দেখছেন সবকিছুরই পুনর্জন্ম আছে
সবই ফুলে ওঠে অথবা চকচকে হয়
ব্যবহার্য যানবাহনেরও পুনর্জন্ম হয়
অর্থাৎ
বাস ট্রেন ফ্লাইট ইত্যাদি সবকিছুরই
অর্থাৎ
ঢিবি টিলা হয়
টিলা পাহাড়-পর্বত হয়
শুধুমাত্র
সব সাধারণ মানুষ এবং গরীবগুর্বোদের
কোনো পুনর্জন্ম নেই
তারা গরীবগুর্বো ও নিঃস্ব হয়ে জন্মায়
এবং গরীবগুর্বো ও নিঃস্ব হয়েই চলে যায়
তাদের জন্য একটাই অপশন
তারা লাঠিয়াল এবং আগ্নেয়াস্ত্রধারী হতে পারে শুধু
ভাঁজ
জগতের যা কিছু ভাঁজ করা থাকে না
তার সামনেই দাঁড়াতে ইচ্ছে হয়
যা কিছু ভাজ করা থাকে
তার ভাঁজ খুলতে খুলতে
নানারকম বিষাক্ত পোকামাকড়
বেরিয়ে আসতে দেখি
হিংস্র পশুদের দেখে
ছুটে পালাতে গিয়ে ঘুরে দাঁড়াই
আর সারা শরীর রক্তাক্ত হয়ে ওঠে
ভাঁজ খুলতে খুলতে
তোমাকে যে পাইনি তা কিন্তু নয়
পেয়েছি এবং হারিয়ে ফেলেছি
ভাঁজ খুলতে খুলতে
তোমাকে পাখির মতো
উড়িয়েও দিয়েছি
কখনো
Facebook Comments