তরাই ও ডুয়ার্সের মন্দির : ইতিহাস ও জনশ্রুতি

তিনটি উপন্যাস

১। সিরকাবাদ—আখচাষীদের জীবন ও গুড়ের বাণিজ্য।
২। ঢেঁকিকল— পুরুলিয়ার জলসমস্যা ও সরকারি জলদুর্নীতি।
৩। আকরিক— সিমেন্ট কারখানার প্রকল্প রূপায়নের জন্য গ্রামবাসীদের উৎখাত করে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বাংলায় প্রথম উপন্যাস।

তিরিশে ফেব্রুয়ারি

নব্বইয়ের কবি অনিন্দ্য রায় এই কাব্যগ্রন্থে একটি নতুন ভাষা নির্মাণ করেছিলেন বলা যায়। নতুন পাঠকের জন্য এটি ‘তবুও প্রয়াস সংস্করণ’ হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে।

তুমি তাকে বারান্দা বোলো

এই কাব্যগ্রন্থের নির্মাণে যে-ভাষাশরীর সৃজন করেছেন কবি ভাস্বতী গোস্বামী, তা ডায়াস্পোরার যন্ত্রণা, বিরহ, পাপ, স্মৃতি ও নৃতত্ত্বকে হাইব্রিড ভঙ্গিতে ছুঁয়ে থাকে। এ এক ভাষা-টানেলের মধ্যে দিয়ে যাত্রা যেখানে আরবি উর্দু ফারসি প্রাকৃত হিন্দির মুখমিশেল, খোদাই করে সাজানো হয়েছে কবিতার জাগ্রত প্রতিমা। ড্রয়িংরুম-শোভন ক্লিশের বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে দিল্লি, হরিয়ানার ফ্রিঞ্জের নিসর্গ, সংকট, শ্বাসধ্বনির মধ্যে কবি মিশিয়ে দিয়েছেন। এক নিষ্ঠুর লাবণ্য। লুটিয়ানের দুষিত বাতাস, যোজনান্তর উড়ালপুল, সর্পক্ষিপ্ত উড়ালপুল, আরাবল্লীতে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসা চরম শুখা বাতাস আর তাতে মিশে থাকা গালিবের রূপকথার মধ্যে বসে এই কবিতাগুলি লেখা হয়েছে। তার দগদগে দাগ ‘তুমি তাকে বারান্দা বোলো’ কাব্যগ্রন্থ ধারণ করেছে শরীরে। ভাস্বতীর যথার্থ উচ্চারণ, ‘একুশ পাতার পর বৃষ্টি থেমে গ্যালো/এদিকে পকেট ভরে উঠেছে ধানে’। এই বইটি সেবনের পর, পাঠকের মুঠি সোনালি শস্যে ভরে ওঠারই তো কথা!

দখলসম্ভবা

যৌনতা যে-কোনো জীবের একটা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। সেই প্রবৃত্তি যখন ব্যাভিচারে দাঁড়ায় তখন নিশ্চয়ই তার পিছনে কোনো প্ররোচনা থাকে। কী সেই প্ররোচনা? সে কি আমাদের শরীরের মধ্যেই থাকে, নাকি শরীরের বাইরে, আমাদের প্রতিবেশে? প্ররোচনা যদি শরীরের মধ্যেই থাকে তাহলে বলতে হয়, আমাদের জৈবিকতাই (‘বায়োলজি’) যত নষ্টের মূল। কিন্তু নিজেদের জৈবিকতা তো আমরা পালটে দিতে পারি না। তাহলে কি ব্যাভিচারই মেনে নিতে হবে? তখন নিজেদের বড়ো অসহায় লাগে। আমাদের পূর্বপুরুষরাও অমন অসহায় ছিলেন; কিন্তু আমরা আধুনিক মানুষ, তাই গর্বিত; সেই গর্বের সঙ্গে এই অসহায়তা মানানসই না। আমরা জীবজগতের অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে নিজেদের তুলনা করি; তাতেও তেমন ভরসা জাগে না। তাহলে কী করা?

দাঁড়কাক; শুধু দাঁড়কাক

জহর সেনমজুমদারের একটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।

দুঃখগুলো সত্যি কোরো

ধাত্রীবৃত্তান্ত

আধুনিক প্রযুক্তির কাছে মাথা নত করেছে ধাত্রীর মতো প্রাচীন কিছু পেশা। পৃথিবীতে আগত সন্তানরা তাদের মাতৃগর্ভ থেকে ধাত্রীদের হাত ধরেই অনুভব করত নতুন পৃথিবীর রূপ। বিশ্ব ইতিহাসে এই ধাত্রী বা মিডওয়াইফরা পালন করেছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মোট আটটি অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে সেই ধাত্রীদের ইতিবৃত্ত।দেশে-বিদেশে ধাত্রী প্রশিক্ষণ এবং ইতিহাস-সাহিত্য-চলচ্চিত্র হয়ে ধাত্রীপেশার বর্তমান পরিস্থিতি কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে এবং তাদের পেশা পরিবর্তন সম্পর্কে আলোকপাত করার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা ধরা আছে এই গ্রন্থে।

নগ্নতা কিংবা নিজস্ব জ্যামিতি

কামনার রূপ কি ত্রিভুজের মতো? আর একটা বিকেল— তার কোনো অবয়ব নেই? আকাশের ভাঙা টুকরোই আমাদের জীবনের জন্য যথেষ্ট… আলো ও ছায়ার মাঝখানটায় দাঁড়িয়ে মনে হয় গোটা জগৎকে ছুঁয়ে আছি।… একটা সরলরেখা, ঠিক তার মধ্যিখানে আমি কিছুটা অনুভূমিক, কিছুটা উল্লম্ব। জীবন হয়তো অসংখ্য বৃত্তচাপের উপরিতল বরাবর নড়েচড়ে বেড়ানো, কিন্তু আজও আলো আর ঘনকের ভেতরটা আমরা দেখে নিতে পারিনি।
আত্মমগ্ন কবি রণজিৎ অধিকারী একজন আলোছায়ার চরাচরে দাঁড়িয়ে দেখে নিতে চান জীবনের অবয়ব।

নবদ্বীপ কাহিনী

গোপাল ভাঁড়ের জীবনীভিত্তিক বই। শ্রীনগেন্দ্রনাথ দাস, গোপাল ভাঁড়ের বংশধর দাবি করে এই গ্রন্থ রচনা করেন। যদি নগেন্দ্রনাথকে গোপালের বংশধর ধরা হয় তাহলে এটিই একমাত্র প্রামাণ্য বই। পরবর্তীতে এই বইকে কেন্দ্র করে নানা নানা গ্রন্থ রচনা ও সিনেমা হয়েছে। বইটি ফ্যাকসিমিলি সংস্করণ।

না যাইয়ো যমের দুয়ার

ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বিষয়ক প্রথম বাংলা বই ‘না যাইয়ো যমের দুয়ার’। তন্ময় ভট্টাচার্যের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের ফসল এই বই। বেদ-পুরাণ থেকে রবীন্দ্রনাথ, তিনি অন্বেষণ করেছেন লোকাচার। সংকলিত হয়েছে দুই বাংলার নানা মন্ত্র।

না-মরা মানুষ ও অন্যান্য গল্প

সমাজের নিম্নশ্রেণির মানুষদের লড়াই, অবস্থান, জীবন-যাপন নানাভাবে গল্প সংকলনে উঠে এসেছে।

নারীর গান শ্রমের গান

গর্ভধারণ, প্রসবযন্ত্রণা, প্রসব প্রক্রিয়া থেকে জীবনের লালনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন— খাবার ও জলের জোগাড়, ঘরলেপা, বাসনমাজা, জ্বালানি আনা, মশলা বেটে রান্নাকরা, চরকা, কাঁথা, জাঁতা, ঢেঁকি— সব নিয়েই গান বেঁধেছেন মেয়েরা। হাটবাজার, পাহাড়জঙ্গল সর্বত্রগামী নানা পেশাজীবী মেয়েদের স্বাধীন কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিশে যায় নারীপুরোহিতের সমাজমঙ্গলের গান। নারীশ্রমের গান সমাজ ও সংগীত ইতিহাসের বহুবর্ণময় আকর।

নিউরোদর্শন

মানুষ হয়ে জন্মানোর একটা ফান্ডামেন্টাল যাতনা আছে। এই যাতনার অনেক রূপ। তবে উৎস একটাই। সেটা হল মানুষের বুদ্ধিমত্তা। মানুষ তার মননে এমন এক ক্ষুধা নিয়ে অস্তিত্বে প্রবেশ করে যে, এখানে জীবনভর সমস্ত উপাদান গিলেও কখনোই সে-ক্ষুধা মেটে না। কারণ, রিয়ালিটির উদাসীন আচরণ আর দুর্বোধ্য রহস্যের মোড়ে মানুষকে প্রতিবারই এক চূড়ান্ত মূর্খতায় পর্যবসিত হতে হয়। আর এখানে যাতনার উৎপত্তিটা হয় তখনই, যখন আমরা বুঝতে পারি যে, একই সময়ে আমরা মূর্খ ও বুদ্ধিমান দুটোই। বুদ্ধিমত্তার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল আত্ম দর্শন অথবা নিজের অস্তিত্ব নিয়ে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এ লিপ্ত হওয়ার ক্ষমতা। আর এই কাজে— সবসময় সবাই না হলেও— মনুষ্যমন খুবই পারদর্শী। তবে এই কাজে কে কত গভীরে লিপ্ত হবে—কে কত গভীরে বিকল্পহীন যাতনায় ডুব দেবে সেটা ঠিক করার ফ্রি উইল কারও আছে কি না নিশ্চিতভাবে তা নির্ণয় করা সম্ভব নয়। এবং আত্ম-দর্শনের চর্চায় আমরা আমাদের সকল ভঙ্গুর অঙ্গগুলোকে একেবারে কেটে ফেলে দিতে পারব কিনা সে-নিশ্চয়তাও দেয়া সম্ভব নয়। যেটা নিশ্চিত সেটা হল মানুষের সামগ্রিক বুদ্ধিমত্তা— যদিও তার বণ্টনে কোনো সমতা নেই— এর গভীর তাড়নায় নিজেকে দেখা, অন্যকে দেখা ও জগৎকে দেখার এক আনন্দ মিশ্রিত যাতনায় কিংবা যাতনা মিশ্রিত আনন্দে মানুষকে মেতে উঠতে হয় মনঃদর্শন তথা নিউরো দর্শনে।

নিরক্ষর ছায়ার পেনসিল

কবি উদাসী না বিপ্লবী? তিনি যে-অক্ষ ধরেই হেঁটে যেতে চান— সেখানে কীসের সংকেত? তিনি কি লোহার কান্না উপেক্ষা করে সোনায় বাঁধানো দাঁতের হাসির সামনে দাঁড়াতে চান? নাকি নিরক্ষর ছায়ার পেনসিলে লিখে ফেলতে চান জীবনের নানা বসন্ত অপরাধ?
ধারাবাহিক চিত্রকল্পের সুবাস— পঙ্কজ চক্রবর্তীর কবিতার সুবাস। প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়া যায় অক্ষরে অক্ষরে

নির্বাচিত গল্প