লেখক নয় , লেখাই মূলধন

কবিতা

পার্থজিৎ চন্দ

অশুভ লেখারা

অভিশাপ

এ অন্ধকার মরুবন্দর, এই তামস সন্ধে, ক্যারাভ্যান ও ব্ল্যাক-প্যান্থার
বালিয়াড়ির ভেতর যে লুপ্ত-সমুদ্রের রেখা… ধকধক করছে
অশুভ তারার আলো
এ সবের মধ্যে, রক্ত-কুয়াশার ভেতর দুলে উঠবে উন্মাদ মাতৃমূর্তি
ঘুমের ভেতর সে উন্মাদিনী সন্তানকে ঠেলে দেবে আগুন-নদীতে
কোনও এক সর্পসংকুল, শয়তান-রহস্য ঘেরা দ্বীপে
তাকে যেতে হবে বাবার সন্ধানে।
সেখানে ক্রুশকাঠ, পেরেকে মাখানো রক্ত, নীল কুয়াশাকে
লালাভ করছে বিষণ্ণ রুধির, আর প্রহরের পর প্রহর
বালি-সমুদ্রের বুক চিরে, সন্তানের দিকে ধেয়ে আসছে
উন্মাদিনীর গূঢ় অভিশাপ

অন্তিম

খিলান ফুরানো রাস্তা। পাখির চোখের দিকে ছুটে আসা বন শিস্‌ দিচ্ছে
দু’দিকের ফাঁকা মাঠে শাদা বক শূন্য থেকে উড়ে এসে
মিলিয়ে যাচ্ছে আবার শূন্যে। স্কুল ছুটি হল; বহুক্ষণ
লোহার ঘণ্টা বাজতে বাজতে স্থির হয়ে গেছে
এখন বিকেল; একটি স্থলচর নৌকার পাল দুলে উঠছে দিগন্তের কাছে—

তারপর এখানে নদীর ঘাট হবে, নৌকাভর্তি ছেলেমেয়ে
বনের ভেতর ঢুকে দেখবে যজ্ঞের রাত
তারামণ্ডলের দিকে উড়ে যাচ্ছে ধোঁয়া,
ধোঁয়ার ভেতর শিশুদের হাসি
ইন্ধনের দিকে এগিয়ে আসছে আগুনের রেখা;
শুনবে শিথিল কণ্ঠের নরনারী, কামাচ্ছন্ন, বলে উঠছে
‘হে, অঙ্গিরা, এ-কান্তার তোমার; এ-নদী ও নৌকা তোমার
আমরা দিন-রাত মাড়িয়ে এসেছি, রক্তাক্ত পা, এবার তোমার কোলে
আমাদের নাও… কাম দাও… ঘুমাই’

ঋক্ষ

রথ থেকে নেমে
তিনি ক্লান্ত ঘোড়ার শরীরে হাত রেখে,
ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছেন
হাওয়া দিচ্ছে
দূরে তারাদের বনে

সাতটি তারার দীর্ঘকেশ, ঋক্ষ…
ঘুম ভেঙে তাকিয়ে দেখেছে
দীর্ঘ রাত,
ক্লান্ত রথস্বামীর মুখে
পড়ে আছে
তার শরীরের মৃদু প্রভা

Facebook Comments

পছন্দের বই