Categories
কবিতা

অরিন চক্রবর্তীর গুচ্ছকবিতা


এক সন্ধ্যায় পুরোনো জামাকে নিজের আয়তনে সেলাই করছি। আঙুলের ডগায় ছুঁচ ফুটল। রক্তমাখা সাপটা শিরাকে পেঁচিয়ে রাখলো। অদৃশ্য তলোয়ার এসে আমূলে গেঁথে গেল খোলসে। উঠে দাঁড়ালাম আয়নার সামনে। দেখছি, মুখোশ খসে পড়ে উড়ে গেল নীরবতায়। গরাদে কালো রাত নামলে আমরা ঘুমিয়ে যাই। জেগে থাকে নগ্ন বিছানা। পরাঙ্মুখ চেতনাকে দিলাম শেষ বসন। ছাই ছাড়া আর কিছুই নেই।

Categories
চিত্রকলা

সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিত্রকর্ম ‘ইন ডার্ক টাইমস্‌’

সৌরভ বন্দোপাধ্যায় ভিজুয়াল আর্ট নিয়ে স্নাতক স্তরের ফাইনাল ইয়ারে শিক্ষারত। ওঁর কাজের মূল বিষয় মানুষ ও তাঁর মন।

Categories
গল্প

অনির্বাণ বসুর গল্প

শ্মশানসম্ভব

কিংবদন্তী ভেসে বেড়ায় হাওয়ায়-হাওয়ায়: এই শ্মশানে চিতার আগুন কখনো নেভে না। এই ঘাট মণিকর্ণিকার। এই জনপদ বহু প্রাচীন বললে আদতে কিছুই বলা হয় না; বস্তুত, এখানে মানুষের সভ্যতার ইতিহাস, প্রথমাবধি, বিচ্ছেদবিহীন। সতীর মৃতদেহের একান্ন খণ্ডের শেষে, বেঁচে থাকা অবশিষ্টাংশ, এখানেই দাহ করেছিল মহাদেব, তাই এই মহাশ্মশানের আগুন জ্বলে চলে অনির্বাণ— এমন কত-না গল্প এখনও ভেসে বেড়ায় এখানকার বায়ুমণ্ডলে।

Categories
গদ্য

রুদ্রদীপ চন্দের গদ্য

ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়

দিবানিদ্রার শেষে শ্মশান ডেকেছে তাকে। একঘুমে কত অনন্ত পার হয়ে গেছে। সকালের প্রাইমারি স্কুল, সবুজ পাতার দল তারপর… ফিরে আসা শস্যক্ষেত, খাল পাশে রেখে। একসময় নদী নেই বলে আপশোষ হতো তার। অবশ্য কত আপশোস সন্ধ্যের মতো ঝুলে আছে জীবনে। ওরা থাকে, যেভাবে স্বর্ণলতা। যেভাবে চাঁদ ঝুলে থাকে চন্দ্রাহতের জীবনে।

Categories
কবিতা

তৃষা চক্রবর্তীর গুচ্ছকবিতা


ভাবি খুব সহজ হবে লেখা
হিম পড়ার মতো প্রথম শীতের
‘গায়ে কিছু দিলি না’, মৃদু ভৎর্সনা—
আর কোনো নদী নেই আমাদের

Categories
কবিতা

আচ্ছন্ন দত্তের গুচ্ছকবিতা

জাদুবিশ্বাস

দেখা হয় না অনেকদিন
দেখা হয় না আমার দেওয়া চিহ্ন হিসাবে
ওর হাতে আমার হাতের ছাপ।

একদিন হাত ধরেছিলাম ওর,

Categories
গল্প

দেবজ্যোতি রায়ের গল্প

এইসব গ্রামীণ ঠেক

উপেন খুড়ো চায়ের দোকানের প্রভাতি আসরে, ঠিক চায়ের দোকানও নয়, আসলে গ্রামের একমাত্র মিষ্টির দোকান, আগে লোকে বাড়িতে অতিথি এলে, তবে চায়ের ব্যবস্থাও আছে, অনেকেই পুরি-তরকারি, মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিল, এখন ছাড় যেহেতু, অন্তত হাফবেলা, ফলে সকালের এই সময়টুকু, সেই কবে থেকে অভ্যাস, সবকিছু তুড়ি মেরে উড়িয়ে, অনেকেই বাড়ি থেকে এক-দুই-তিন-চার, বাজারও তো বসে,

Categories
গদ্য

ঈশিতা দেসরকারের গদ্য

গান

ভোরের আজান শুনতে পাই না আজ একমাস। রেল লাইন পেরিয়ে কুমারডাঙ্গি থেকে বেশ কয়েক বছর চলে এসেছি এ-পাড়ায়। আমার কিশোরীবেলা পর্যন্ত নানাবিধ মেঘমল্লার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কুমারডাঙ্গির এধারে ওধারে। ও-পাড়াতে একটা মসজিদ আছে। দীর্ঘদিন রোদে রাখা পেস্তার মতো তার রং। মসজিদের কাঁধ ঘেঁষে জুনিয়ার হাই স্কুল। উলটো দিকে আটচালা ঘর।

Categories
কবিতা

তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা

জীবন রাতখোর

পরিযায়ী

সমস্ত জেগে থাকায়
মাথার ভেতর ওড়ে শঙ্খচিল…
জীবনের কাছে একটামাত্র সিগারেট চেয়েছিলাম!

Categories
কবিতা

অনুপম মণ্ডলের গুচ্ছকবিতা

গন্ধর্ব-নগরের জন্য লেখা

মৌরির গন্ধের মতো, রক্তিম, তাঁর আভোগ, ঢলে পড়ে কোথাও বাতাসে। বাসকলতার পাশে, ঘুমের শাখাগুলো নুয়ে আছে। গিয়েছে ঝরে বটের বুড়ি পাতা। কারা, ওই থোকা থোকা আঁধার নিঙড়ায়ে, মধুকূপি ঘাসের পরে রেখে যায়।